রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে পদ্মার ১৫টি চরের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় তিন শতাধিক পরিবার চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত পানিবন্দি মানুষকে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি। সরেজমিন দেখা যায়, সেখানে দিয়াড়কাদিরপুর চরের ২৩টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছেন। তাদের মতো আরও ১৪টি চরের একই অবস্থা।

তাদের বের হওয়ার কোনো পথ নেই। যাতায়াতের একমাত্র ব্যবস্থা হচ্ছে টিন দিয়ে তৈরি করা ডিঙি নৌকা। এসব এলাকার আশপাশে বাজার না থাকায় দূরে বাজার করতে যেতে হয় একইভাবে। এভাবেই চলছেন তারা। এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস কৃষিকাজ। এমন পরিস্থিতিতে চারদিকে পানি উঠে জমির ফসল ডুবে গেছে তাদের। তবে তাদের অনেকেই মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।

এসব চরের মধ্যে দিয়াড়কাদিরপুর চরটির প্রায় প্রতিটি পরিবারই অন্যের জমি বার্ষিক ভাড়া নিয়ে বাড়ি করে বসবাস করেন। সেখানকার বাসিন্দা সাবিরুল ইসলাম জানান, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে জমি ভাড়ায় দুটি ঘর তৈরি করে থাকেন তিনি। পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাগল ও গরু নিয়ে বিপদে পড়েছেন তিনি। তার স্ত্রী সালমা বেগম জানান, কৃষিকাজ না থাকায় জাল দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে পাওয়া টাকা দিয়েই কোনো রকমে সংসার চলছে তাদের।

সরকারি বা বেসরকারি কোনো ত্রাণ তাদের দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জালাল উদ্দিন জানান, চরকালীদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের ফলে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চকরাজাপুর কমিউনিটি ক্লিনিক পদ্মার ভাঙনে হুমকির মধ্যে রয়েছে। চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল আজম জানান, পদ্মার চরের মানুষের ৫০ শতাংশ জমির ফসল পানির নিচে তলিয়েছে।

আর ভাঙনের কারণে চরের শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তারা গরু-ছাগল নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত তাদের সরকারি বা বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি। এ বিষযটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা জানান, পদ্মার চরের পানিবন্দিদের ত্রাণ সহাযোগিতার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সহযোগিতা পেলে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা প্রদান করা হবে।